Homiletics || প্রচার পদ্ধতি

Homiletics || প্রচার পদ্ধতি

-ইমাম আব্দুল মাবুদ চৌধুরী

১। প্রচার প্রদান
 
প্রচার সব সময় করা হয় না কিন্তু সাধারন ভাবে তার জন্য প্রস্তুতি নিতে হয়।
প্রচার সাধারনত ২ জায়গায় করা হয় :
 
ক) গৃস্থ ইবাদতে
 
খ) জামাতের পুলপিটে (Pulpit)
 
প্রচার Sermon যা Latinভাষা sermo (Discourse) থেকে এসেছে। যার অন্য অর্থ হল ‘conversation’ তৎকালীন সময়ে প্রচার হতো প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে। পরবর্তী সময়ে তা একক অবস্থান গ্রহন করে।
নোট সহ প্রচার
বিখ্যাত প্রচার সম্ভবত বলা হয়, নাসরতের ঈসা প্রদত্ত ‘‘পর্বতে দত্ত উপদেশ”; সম্ভবত এটি প্রচার করা হয় ৩০খ্রীঃ দিকে যা মথি লিখিত সুসমাচারের ৫:১-৭:২৯ আয়াতে লেখা হয়েছে, যেখানে ভূমিকা ও উপসংহার সহ যাবতীয় তথ্য প্রদান করা হয়েছে। এটি নিকটবর্তী গালীল সাগরের শেষে উত্তর দিকের পাহাড় থেকে প্রচার করা হয়। এই উপদেশের মধ্যে মুল ঈসায়ী নীতির অধিকাংশ উলে¬খ করা হয়েছে।
নীতিমালা সম্বলিত আরেকটি উপদেশ ঈসা প্রদান করেছিলেন যাকে বলা হয় ‘‘সমতলে দত্ত উপদেশ’’ বা Sermon on the plainযা লুক সুসমাচার ৬:১৭-৪৯ আয়াতে আমরা দেখতে পাই। পরবতী সময়ে প্রচার প্রথম শতব্দীতে হযরত পিতর (প্রেরিত ২:১৪-৩৬); হযরত স্তিফান (প্রেরিত ৭:১-৫৩) সহ অনেকে করেছিলেন।
প্রটেষ্টেনিজমের নীতি
পরবর্তী সময়ে রোমান ক্যাথলিকদের বিশ্বাসকে বিশদ ব্যাখ্যা প্রদান করতে গিয়ে যে আন্দোলন গড়ে উঠল তা প্রোটেষ্টেন্ট প্রচার (protestant sermons) হিসেবে পরিচিত হয়। তাদের প্রচারের মুল বিষয় ছিল একমাত্র বিশ্বাসেই নাজাত পাওয়া যায়। তারা প্রচার করতে শুরু করল সুসমাচারে বিশ্বাস করা, খোদার উপর আস্থা রাখা যে ঈসা মসীহের মাধ্যমে শুধু নাজাত । সাথে সাথে শুধু প্রভুর ভোজের অনুষ্ঠানের পরিবর্তে ‘গান’ এবাদতের একটি অন্যতম স্থান দখল করে।
পরবর্তীতে ১৭০০-১৮০০ সালে এক মহা জাগরণ সৃষ্টি হলো। সে সময় প্রচারক যোনাথন এর্ডওয়ার্ড এর ‘‘রাগান্বিত খোদার হাতে পাপীগন’’ বিখ্যাত প্রচারের মাধ্যমে আমেরিকায় এই জাগরণ সৃষ্টি হয়। এই প্রচারের মাধ্যমে তিনি লোকদের মধ্য ভয় জাগাতে চাননি কিন্তু এই সংবাদ দিতে চেয়েছেন যে, তাদের পাপের হ্মমার পথ লাভের উপায় আছে। 
প্রচারের ধরন সমূহ

 
অনেক ধরনের প্রচার বিদ্যমান। কিন্তু তা নির্ভর করে কি বিষয়ে প্রচার করবে বা কাদের মধ্য প্রচার করবে তার উপর।
 
১. বিষয় ভিত্তিক প্রচার : নিদিষ্ট বিষয়ে ও চলমান ঘটনা সম্বলিত।
 
২. জীবনী সংক্রান্ত প্রচার: কিতাব কোন নিদিষ্ট চরিত্রের উপর প্রচার করা, যাতে কিতাবে কিছু আয়াত ও অংশ থাকবে।
 
৩. সুসমাচার প্রচারমুলক প্রচার: সুসমাচার প্রচারের মাধ্যমে এবাদতকারীদেরকে পুনরায় তাদের পূর্বের বিশ্বাাসে নিয়ে আসা বা এবাদতকারীদেরকে নিদিষ্ট বিষয়ে বিশ্বাসী করে তোলা।
 
৪. ব্যাখ্যা বা বর্ণনা মূলক প্রচার: কিতাবের একটি নিদিষ্ট অংশ নিয়ে প্রচার করা এবং প্রত্যশা করা যে, এবাদতকারীগণ যেন এর অর্থ বুঝতে পারে।
 
৫. ঐতিহাসিক প্রেহ্মাপটের আলোকে প্রচার: যে অংশ থেকে প্রচার করা হচ্ছে তার ঐতিহাসিক পটভূমি ও কিতাবের আলোকে বিষয়কে ব্যাখ্যা করা।
 
 ৬. লিখিত ভাবেও প্রচার করা যায়:

৭. মৌখিক ভাবেও প্রচার করা যায়:

 প্রচার প্রদানের নিয়ম
 
প্রচার করার বিষয়টি নির্ভর করবে কতটুকু সময় তা করা হবে এবং কতটুকু প্রস্তুতির জন্য সময় দেয়া হবে তার উপর।
 
♦         কিতাবের অংশ থেকে প্রচার: এটিতে পূর্ব প্রস্তুতি নেয়া প্রয়োজন, যা নোট করতে ও আয়াত খুঁজে বের করতে সাহায্যকরবে, অন্যথায় মুখস্ত স্বরণ শক্তির উপর নির্ভর করতে হবে।
 
♦         প্রস্তুতিহীন ভাবে প্রচার: কোন রকম বিস্তারিত নোট না নিয়ে এবং অনেক সময় কোন রকম প্রস্তুতি না নিয়ে প্রচার করা। আবার অনেক সময় মুল শিরোনাম ও কয়েকটি আয়াতের তথ্য নিয়ে শুরু করা।
 
♦         উপস্থিতমত প্রচার: কোন রকম পূর্ব প্রস্তুতি না নিয়ে প্রচার করা।
 
♦         বিষয় ভিত্তিক প্রচার
 
 
 
বিষয় ভিত্তিক প্রচার করার সময় লক্ষ্য রাখতে হবে:

 
 
ক) যে বিষয় প্রচার করছেন তা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে কিতাব ভিত্তিক
 
খ) তা বাস্তবতার সাথে সুনিদিষ্ট ভাবে মিল রয়েছে
 
গ) লোকসংখ্যা, কোন ধরনের জামাত বা এবাদত পদ্ধতি, সংস্কৃতি ইত্যাদি বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে।
 
এখানে ১০টি উপায় বলা হলো যা আপনার জামাতের এবাদতে আমুল পরিবর্তন আনতে পারে। যথা :
 
 
১. এবাদতে ব্যবহৃত সমস্ত কিছুর দৃষ্টিকোন যেন খোদার দিকে হয়

এবাদত খানায় এমন কোন কিছু আছে কিনা যা খোদার দিকে মনোযোগ দিতে বাধাগ্রস্ত করতে পারে তা সরিয়ে ফেলুন। নোটিশ বা বিশেষ ধন্যবাদ জ্ঞাপন কাউকে ইত্যাদি আগে অথবা শেষের দিকে করতে হবে যেন এবাদতে লোকজনের দৃষ্টি খোদার দিকে থাকে।
 
 
২. এবাদতে যে সমস্ত কিছু ব্যবহ্নত হবে তা যেন কিতাব ভিত্তিক হয়

যেমন কোন ধরনের কার্পেট ব্যবহার করা হবে, কত সময় প্রচার করা হবে,কোন সময় শুরু হবে, মাইক ব্যবহার করব কি না ইত্যাদি।
 
 
৩.খোদার গ্রহন যোগ্য এবাদত যা ভক্তি ও ভয়ের সাথে যেন হয়

কিতাব শুধু ‘‘কি’ এবাদত করব তা বলে না কিন্তু সাথে সাথে কিভাবে এবাদত করলে তা আরো বেশি খোদার কাছে গ্রহন যোগ্য হবে তাও শিক্ষা দেয়।
‘বিশ্বাসে’ (ইব্রাণী ১১:৪) ‘রূহে’ (ইউহোন্না ৪:২৪) এবং ‘ভক্তি ও ভয়ে’ (ইব্রাণী ১২:২৮) এবাদত করতে হবে। হাসাহাসি, নিজেদের মধ্য কথা বলা, মোবাইল ফোন অন রাখা, বার বার ঘড়ি দেখা এরকম অনেক কিছু আছে যা এবাদতের দৃষ্টি কোন বাধা গ্রস্থ করে।
 
 
৪. ব্যাখ্যামুলক প্রচার:

ব্যাখ্যামুলক প্রচার হলো কিতাবে নিদিষ্ট কোন অংশ বা অধ্যায় থেকে প্রচার করা। কিন্তু লক্ষ্য রাখতে হবে জŸুর ২৩ অধ্যায় পাঠ করলেন কিন্তু প্রচার শুরু করলেন বাপ্তিস্ম গুরুত্বপূর্ন, আরো অন্যান্য বিষয় । যদিও তা পিতর থেকে কিন্তু তা জবুর ২ অধ্যায়কে উপস্থাপন করছে না।
 
 ৫. এবাদতকারীগন যেন কিতাব পাঠ করতে পারে সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে(১ তীম ৪:১৩)

অনেকে শুধু ঐ দিনের নিদিষ্ট অংশ পাঠ করে। কিন্তু অনেকে আছে নিজে ঘরে কিতাব পাঠ করে না। তাই জামাতে যেন সবাই কিতাব পাঠ করার সুযোগ পায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
 
 
৬. মোনাজাত:

প্রায় অনেকে দের ঘন্টার এবাদতে যদি ২/৩ মিনিট মোনাজাতে সময় দেয়া হয় তাহলে মোনাজাত বিহীন এবাদত বলা যায়। প্রথম জামাতে যদি আমরা দেখি এবাদতে তারা প্রচুর সময় প্রদান করেছেন। এবাদতের একটি অন্যতম অংশ মোনাজাত। তাই মোনাজাতে সময় দিতে হবে।
 
 
৭. এবাদতের সমস্ত কার্য্যক্রম স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় যেন চলে:

হযরত পৌল বলেছেন – ১ করি ১৪:৪০ এবাদতের সময় পালনীয় আদেশ, অনেক সময় ২০ নং গান করব না বলে, বরং গানের কথা ও এই গানের উদ্দেশ্য বললে এবাদতে আরো বেশি মনোনিবেশ করা যায়।
কিতাব পাঠের প্রথমে আহবান জানিয়ে তারপর কিতাব পাঠ করলে আরো আকর্ষনীয় হয়।
 
 
৮. এবাদতকারিদের অংশ গ্রহন বৃদ্ধি করা:

মোনাজাতে, গানে, কিতাব পাঠে,আত্নসাক্ষ্য দানে ইত্যাদিতে যতবেশি এবাদতকারীদের অংশগ্রহন বৃদ্ধি করা যায় ততবেশি এবাদত প্রানবন্ত হবে।
 
 
৯.তাদের বাদ্যাযন্ত্রের আওয়াজ যেন নিয়ন্ত্রনে থাকে:

অনেক সময় এবাদতকারীরা গানের কথা বুঝতে পারেনা, যন্ত্রের আওয়াজ বেশি হওয়ায়। তাছাড়া গানে যেন রুহানিক ভাব থাকে, মানুষ যেন মনে না করে এখানে কোন গানের প্রোগ্রাম হচ্ছে।
 
১০. প্রত্যেক সপ্তাহের এবাদত পরিচালনা কেমন হল তা মূল্যায়ন করুন:
বিশ্বস্ত কোন নেতা, সদস্য বা কমকর্তা, কর্মচারী এদের মধ্য থেকে বিগত সপ্তাহের এবাদত মূল্যায়ন করুন। যা আরো ভালভাবে পরবর্তীতে পরিচালনা করতে সাহায্য করবে।
* প্রচারকদের দু’টি বিষয় অবশ্যই গুরুত্ব দিতে হবে
 
(১) দেশ ও বিদেশের সংস্কৃতির কৃষ্টি সম্পর্কে জানতে হবে অর্থাৎ বই পড়ার অভ্যাস বৃদ্ধি করতে হবে।
 
(২) কিতাবেব জ্ঞান বৃদ্ধি করতে হবে। খোদার জগত সর্ম্পকে, জগতের নানান বিষয় - বিজ্ঞান, সুস্থতা, আশ্চর্য্য কাজ - ইত্যাদি বিষয় , কিতাব কি বলে তা জানতে হবে। অর্থাৎ কিতাব পাঠের অভ্যাস করতে হবে।
 
 
 
প্রচার কিভাবে প্রস্তুত করবেন:

 
 
প্রথমত :যিনি প্রচার করবেন তাকে খোদার আহবান প্রাপ্ত হতে হবে: নেকে আছে প্রচার করতে চায়, কিন্তু খোদার আহবান প্রপ্ত নন; ফলে তিনি প্রচার কাজে ব্যর্থ হন। আর যদি তাই হয় তাহলে আপনার এই অনি চর্চার জন্য খোদা একদিন আপনার বিচার করবেন।
 
দ্বিতীয়ত :কিতাব সর্ম্পকে ভাল জানা থাকতে হবে: কিতাবের উপর ভাল পরিশ্রম করে প্রচার তৈরি করতে হবে। অন্যথায় আপনি এমন সব কথা ও গল্প করবেন যা কিতাবের বা বাইরে এবং মানুষের কাছে বিরক্তিকর হবে অথবা খোদা সর্ম্পকে মানুষ যথেষ্ট জানার সুযোগ পাবেনা।
 
তৃতীয়ত :মোনাজাতে যথষ্টে সময় দিতে হবে : আপনি যে অংশ বা বিষয় প্রচার করতে চান, সেই বিষয় খোদার কাছে মোনাজাতে সাহায্য ও জ্ঞান চাইতে হবে। তিনি আপনাকে সাহায্য করবেন কিভাবে তা প্রস্তুত করবেন। কোন কোন বিষয় যোগ করবেন, কোন কোন আয়াত আরো সংগ্রহ করবেন।
চতুর্থ :নোট করতে হবে : আপনি যখন প্রচার তৈরি করবেন, তখন কিতাবের পাশে কাগজ কলমও থাকতে হবে। তাহলে কোন পয়েন্ট বা আয়াত মনে রাখার সাথে সাথে নতুন কোন বিষয় উপলব্ধিতে আসলে তা লিখতে হবে।
 
 
 
প্রচার প্রস্তুত করা :    

 
 

প্রথম ধাপ : প্রাথমিক প্রস্তুতি
১। আপনার বিষয়বস্তু পছন্দ করুন :-
আপনি এমন একটি বিষয় পছন্দ করুন যা আপনার জামাতের জন্য প্রয়োজন। অথবা এমন একটি কিতাবের অংশ বাছাই করুন যা জামাতের বর্তমান প্রেহ্মাপটে প্রয়োজন। তাছাড়া মনে রাখতে হবে যে অংশ বা বিষয় পছন্দ করেছেন সে সর্ম্পকে আপনার ভাল ধারনা থাকতে হবে। পর্ব অনুযায়ীও বিষয় পছন্দ করতে পবে ,আর এটি করতে হবে অন্ততঃ প্রচার করার ৪/৫ দিন আগে।
পছন্দনীয় বিষয়টি ভালভাবে পড়–ন। প্রয়োজনে সাহায্যের জন্য সে সর্ম্পকে অন্যান্য বই পড়–ন যেন সেখান থেকে একই বিষয়ে আরো কিতাবে আয়াত, উদাহরন ইত্যাদি সংগ্রহ করতে পারেন।
তারপর সবগুলোর নোট রাখুন। এরপর ভূমিকা-বিষয়বস্তু- উপসংহার পদ্ধতিতে সাজান। ২-৩ বার পাঠ করুন এবং নতুন কিছু মনে আসলে তা লিখুন। এরপর তা ড্রয়ারে রেখে দিন।
২। বিষয়ের উপর ধ্যান করুন :-
এখনও আপনার হাতে ৩-৪ দিন সময় রয়েছে। কিন্তু ইতিমধ্যে আপনি আপনার মনে প্রচার করার বিষয়ে বীজ বুনেছেন। এখন সময় হলে খোদা আপনাকে সেই বীজকে যতœ নেয়া ও আশ্চর্য্যজনক ভাবে ভাল ফল পাবার জন্য সাহায্য করবেন। আপনি চলার পথে, বিভিন্ন ঘটনা বলি, জীবন-যাপন ও কাজে প্রার্থনায় ইত্যাদির সাথে আপনার প্রচারের বিষয়ের সাথে সাম খুঁজে পাবেন , কারন আপনার মানসপটে প্রস্তুতকৃত প্রচারটি রয়েছে। দেখবেন চলতে চলতে আপনি আপনার প্রচারের আরম্ভে, মাঝখানে ও শেষে আরো অনেক বাস্তব ভিত্তিক তথ্য বা কিতাবের নতুন কোন আয়াত, ঘটনা ইত্যাদি যোগ করেছেন। সেই কারনেই ৪-৫ দিন পূর্বেই প্রচার তৈরি করেছেন।
 
দ্বিতীয় ধাপ :   প্রচারটিকে পরিমার্জিত বা সংশোধন করা
১। বিশেষ গুরুত্বপূর্ন বিষয়গুলোকে প্রধান্য দিন :
আপনার হাতে এখন বেশি কিছু তথ্য ও ধারনা জন্ম হয়েছে যা আপনাকে সংযোজন করতে হবে। তাই প্রচারটি নিন এবং কয়েক বার পড়–ন ও যেখানে যে আয়াত বা বিষয় যোগ বা বিয়োগ করার প্রয়োজন তা করুন।
আপনার প্রচারের মুল বিষয় ও সে সর্ম্পকে আয়াত গুলো আবার পড়–ন। তারপর প্রচারের নোটে যেখানে যা যোগ বা বিয়োগ করার প্রয়োজন তা করুন।
১। এখন আপনি সম্পূর্ন প্রচারটি মধ্যমমানের কাগজে সাজিয়ে সুন্দর ভাবে লিখুন। যা আপনি প্রচার করার সময় জামাতে ব্যবহার করবেন। জামাতে যে নোট ব্যবহার করবেন তাতে বিস্তারিত লেখার প্রয়োজন নাই। কিন্তু মূল পয়েন্ট গুলো লিখতে হবে সংক্ষেপে :
যেমন - ভুমিকা :- যে গল্প / উদাহরন বা আয়াত পাঠ করবেন শুধু তার প্রাথমিক তথ্য লিখুন। তারপর শিরোনাম গুলোর সাথে আয়াতের তথ্য ও যে বিষয় বলবেন তার প্ররম্ভিক বিষয় লিখুন। শেষে বা প্রয়োগে / উপসংহারে যা দিয়ে শেষ করতে চান তার মুল প্রারম্ভিক বিষয় লিখুন। আরেক বার সম্পূর্ন প্রচার পাঠ করে তা ড্রয়ারে রেখে দিন।
২। প্রার্থনা করুন ও পরবর্তী দিনের জন্য অপেক্ষা করুন।
 
তৃতীয় ধাপ :আপনার প্রচারটি অভ্যাস (Practice ) করুন
পরবর্তী দিনে আপনি একাকী প্রচারটি করতে থাকুন, মনে রাখতে হবে যে, আপনি জামাতে সকলের সামনে তা করছেন। এমন ভাবে প্রচার করুন যে, আপনি যে বিষয়ে প্রচার করছেন সেই বিষয়ে আপনি পারদর্শী। সাথে একটি ঘড়ি রাখুন যেন সময় কতটুকু নিচ্ছেন তা বুঝতে পারেন। কারন এখনই সময়, যদি আপনার প্রচারের সময় কম বা বেশি হয় তাহলে পুনরায় চিন্তা করতে পারবেন - কোথায় কোথায় কমাতে হবে - বা কোথায় কোথায় বাড়াতে হবে। আর তা করুন।
এখন প্রয়োজনে আয়নার সামনে অথবা পারিবারিক সদস্যদের সামনে আপনি প্রচার করুন। যেন আপনি বুঝতে পারেন কতটুকু গলার আওয়াজ হওয়া প্রয়োজন, চেহারার ভাব কেমন হচ্ছে বা কেমন হওয়া প্রয়োজন এবং প্রচারের মধ্যে ব্যবহৃত উদাহরন বা বিষয় গুলোতে কোন পরিবর্তন প্রয়োজন আছে কিনা ইত্যাদি সম্পর্কে ধারনা পাবেন। যদি গঠনমুলক সমালোচনা হয় তা গ্রহন করুন এবং যদি নিরুৎসাহমূলক হয় বর্জন করুন। মনে রাখবেন আপনি খোদার পক্ষে জামাতে কথা বলতে যাচ্ছেন এবং সেজন্য মোনাজাত সহ যথেষ্ট প্রস্তুতিও নিয়েছেন, তাই নিরুৎসাহ হবার প্রয়োজন নেই।
 
চতুর্থ ধাপ : নিদিষ্ট দিনে/ সময়ে প্রচার করা
জামাতে যাবার সময় ভালভাবে লক্ষ্য রাখুন নোট গুলো ও কিতাব আপনার সাথে সাথে আছে। পোশাক ভালভাবে পরিধান করেছেন। প্রার্থনা করুন যেন খোদা তার পাক-রূহ্ দ্বারা আপনাকে ব্যবহার করেন। জামাতে গিয়ে এবাদতের আগ মুহুর্ত্বেও মনে মনে প্রার্থনা করুন যেন তিনি এই প্রচারের মাধ্যমে উপস্থিত সকলের হৃদয়ে কাজ করেন।
 
 
 
 
=সমাপ্ত=